রাজ্যসভায় জহর সরকার।
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে সংসদের দুই কক্ষের আলোচনামঞ্চে আজও মোদী সরকারকে আক্রমণ অব্যাহত রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যসভায় তাঁর প্রথম বক্তৃতাতেই কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন সাংসদ জহর সরকার। জানালেন, তিনি ৪১ বছর সরকারের বিভিন্ন দফতরে কাজ করেছেন, কিন্তু এত ভয়াবহ নীতিপঙ্গুতা এর আগে কখনও দেখেননি। লোকসভায় এ দিন সরব হন তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
জহরবাবু তাঁর সাংসদ জীবনের প্রথম বক্তৃতায় কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক দিকগুলির সমালোচনা করেন। তাঁর কথায়, “গত কয়েক দিন ঘরেই এত মোদীনামা শোনা যাচ্ছে, যা শুনে সামান্য আত্মসম্মান রয়েছে এমন যে কারও লজ্জা হবে। আজ ভারত এমন এক চৌমাথায় এসে দাঁড়িয়েছে, যেমনটা আগে কখনও হয়নি। আমাদের রাজনীতি ধ্বংস। আমাদের রাজনৈতিক কাঠামো এমন বিপদের সামনে কখনও পড়েনি। অথচ এই কাঠামো তাঁরাই তৈরি করেছিলেন যাঁরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। সংগ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়া মানুষেরা নয়।”
জহরবাবুর কথায়, “আমি ৪১ বছর সরকারে কাজ করেছি, এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আগে কখনও দেখিনি। ১৯৯১ সালেও নয়। অর্থনীতির এই হাল হয়েছে গা-জোয়ারি কিছু নীতি প্রণয়নের জন্য।” আজ তাঁর বক্তৃতায় বেকারত্ব এবং অসাম্যের দিকটি তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে তুলে আনেন জহরবাবু। তাঁর বক্তব্য, দেশে এই মুহূর্তে ৬০ কোটি মানুষের কাজের নিরাপত্তা নেই।
অন্য দিকে আজ সকালেই মহুয়া আসর গরম করেন একটি টুইট করে। সেখানে তিনি বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেব। বিজেপিকে আগাম তৈরি থাকতে বলছি। প্রয়োজন হলে তাঁরা একটু গোমূত্রও খেয়ে নিতে পারেন!’
পরে বক্তৃতায় মহুয়া বলেন, “রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় বহু বার নেতাজির প্রসঙ্গ রয়েছে। আমি দেশকে মনে করিয়ে দিতে চাই এই নেতাজিই কিন্তু বলেছিলেন, ভারত সরকারের সমস্ত ধর্মের প্রতি সম্পূর্ণ পক্ষপাতহীন মানসিকতা থাকা প্রয়োজন। হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে যা ঘটেছে তা কি নেতাজি মেনে নিতে পারতেন? যেখানে মুসলমানদের গণহারে হত্যার জন্য ডাক দেওয়া হয়েছে?” মহুয়ার দাবি, “মোদী সরকার ইতিহাস মুছে দিতে চায়। তার কারণ তারা ভবিষ্যতের ব্যাপারে শঙ্কিত, বর্তমান নিয়েও তাদের আস্থার অভাব রয়েছে।” মহুয়া বলেন, “ভারতের ইতিহাস ধর্মনিরপেক্ষতা, সৌভ্রাত্র এবং বহুত্ববাদের কথা বলে। এই ব্যাপারগুলিই এই সরকারকে অত্যন্ত বেশি রকম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়।” আজ তাঁর বক্তৃতার ঝাঁঝে স্পিকারের আসনে বসা রমা দেবীকে বলতে শোনা যায়, “মহুয়াজি আপনি এত রেগে কথা বলবেন না! একটু ভালবাসার সঙ্গে বলুন!’’ জবাবে মহুয়া বলেন, “রাগ হচ্ছে! কী করতে পারি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy