All Bangla Content
নির্বাচনী প্রক্রিয়ার একজন উৎসাহী এবং তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষক হওয়াতে আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে, এই নির্বাচন অন্যান্য বারের চেয়ে সত্যিই বেশ আলাদা রকম। এটা বলছি, কারণ বর্তমানে আমার মূল দুশ্চিন্তার বিষয় হল, আমরা কি ভোটদাতাদের সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করব না যাতে তাঁরা পরবর্তী কালে, যে কোন শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের হাতে— সে কেন্দ্রেই হোক বা রাজ্যে— চিহ্নিত এবং নিগৃহীত না হন?
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কংগ্রেস, সিপিএম বা তৃণমূল পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলার বহু আগেই আইএএস, আইএফএস, আইপিএস ও নানা কেন্দ্রীয় সার্ভিস-এর প্রায় দেড়শো জন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার কমিশনকে ‘হলুদ কার্ড’ দেখিয়েছিলেন। নেতৃত্বে ছিলেন এক জনজাতির তিন অফিসার। এই দুই অভিযোগে পার্থক্য আছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল জমানায় পরিচালিত সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচন যে অবাধ হয়নি, সে স্মৃতি টাটকা। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় ও পরে বামফ্রন্ট আমলের ‘রিগিং’ও কুখ্যাত। কিন্তু ‘কনস্টিটিউশনাল কনডাক্ট’ বা সাংবিধানিক আচরণবিধি নাম দিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে এর কোনওটির কথাই বলেননি অবসরপ্রাপ্ত অফিসাররা। এই দলে আছেন একাধিক প্রাক্তন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার, অনেক রাজ্যের প্রাক্তন প্রধান নির্বাচনী আধিকারিক এবং বহু প্রাক্তন রিটার্নিং অফিসার।
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল কয়েক ফুট দূরত্বে রাখা সাভারকরের ছবির ওপর। ‘হিন্দুত্ব’-এর ধারণাটির স্রষ্টা সাভারকর এই মতবাদের জনক হিসাবে স্বীকৃত। তিনি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে এক হিন্দু ভারতের স্বপ্ন দেখতে এবং তার জন্য দাবি জানাতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। যে কারাগার পরিদর্শনে মোদী গিয়েছিলেন, সেটি হল আন্দামানের সেলুলার জেল। ভয়ঙ্কর ‘কালা পানি’র কথা ভারত কখনও ভুলতে পারবে না।
একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছেন? আজকাল কোনও কল সেন্টার থেকে আপনাকে ফোন করে কেউ একটা মোবাইল কানেকশন নেওয়ার জন্য যখন ঝোলাঝুলি করেন, সাধারণত প্রায় পুরো সময়টাই তিনি হিন্দিতে কথা বলেন। যিনি ফোন করেছেন তাঁর উচ্চারণ শুনে আপনি বুঝতে পারবেন যে ছেলেটি বা মেয়েটি বাঙালি, তাঁর হিন্দিতে বাংলা টানটাও বেশ টের পাবেন আপনি, কিন্তু কথাবার্তা হিন্দিতেই চলবে। সুইগি বা মিন্ট্রাকে ফোন করার সময়, ব্যাঙ্কে বা বড় বড় মল-এ, অ্যাপ ক্যাব-এর চালকদের সঙ্গে, বস্তুত প্রায় সর্বদা এবং সর্বত্রই আমরা আজকাল হিন্দিতে কথা বলি। হিন্দি বলায় চোস্ত হয়ে উঠতে না পারলে আজকাল খুব মুশকিল।
প্রসঙ্গত, শবরীমালা বা শবরীমালাই হল পাহাড়ের নাম, দেবতার নয়। দেবতা হলেন শাস্তা আয়াপ্পন। নামের দু’টি অংশই তাৎপর্যপূর্ণ। ধর্ম-শাস্তা হল মালয়ালিতে বুদ্ধের একটি নাম— এই ধারণা বহুলপ্রচলিত যে, এখানে আদি দেবতা ছিলেন বৌদ্ধ। এখনও তীর্থযাত্রীরা সারা পথ ‘শরণম্’ বলতে বলতে যান। অন্য নামটি (আয়াপ্পন) এসেছে সুপ্রাচীন দ্রাবিড় ঈশ্বর ‘আই’ থেকে।
কথায় বলে, ভাগ্য মানুষকে গৌরবের পথে নিয়ে যায়, কিন্তু নিয়তি যা দেয় অহঙ্কার তাকে নষ্ট করে। খুব উচ্চ পদে আসীন মানুষদের কাছে মানুষ আশা করে যে তাঁরা কিছু দায়িত্ব স্বীকার করবেন। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি হল, তাঁরা আপন পদটির উপযুক্ত আচরণ করবেন। পদমর্যাদা তাঁরা যদি বাড়াতে না-ও পারেন, পদটির যাতে অবমাননা না হয়, সেটা নিশ্চিত করা তাঁদের কর্তব্য। ভারত এ ব্যাপারে বিশেষ ভাগ্যবান— এক জন ছাড়া সব প্রধানমন্ত্রীই তাঁদের পদের যোগ্য এবং প্রত্যাশিত আচরণই করে গিয়েছেন, এমনকি তাঁদের ব্যক্তিগত মতামতের বিরুদ্ধে গিয়েও।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী একটি সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে অগণিত দেবদেবীর নাম বলে গেলেন। ব্যাপারটা বিশেষ ভাবে চোখে পড়ল। দুর্গাপুজো আসছে, তাঁর সরকারের মন্ত্রী ও দলের নেতারা উল্টোরথের দিন খুঁটিপুজো নিয়ে দারুণ মেতে উঠলেন, সেটাও চোখে পড়ল। তবে ঘটনা হচ্ছে, বাংলায় এখন পুজো আর উৎসবের শেষ নেই। শীতলা, মনসা, রক্ষাকালী, ধর্মঠাকুর, বড়ঠাকুর এবং আরও অনেক দেবদেবী এ কালে গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসী হয়েছেন, অনেকটা বিভূতিভূষণ বা সত্যজিতের অপুর মতো।
যাদবপুরের কলা বিভাগ ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্সিকে ছাড়িয়ে গিয়েছে, তবে এখনও তার ছায়া যাদবপুরের লিলিপুলে ঘোরাফেরা করে বলেই মনে হয়। এক দিকে আধিপত্যকামী সরকারি কর্তারা এবং অন্য দিকে বিদ্রোহী ছাত্র ও একগুঁয়ে শিক্ষক— এই দুই তরফের মাঝখানে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাঁসফাঁস করছেন। শোনা যায়, মাঝে মাঝেই নাকি তাঁদের ভর্ৎসনা করা হয়, কেন তাঁরা ‘প্রেসিডেন্সি মডেল’টি চালু করতে পারছেন না।
হরেকৃষ্ণ মহতাব ১৯৪৮ সালে বলেছিলেন, বৌদ্ধধর্ম থেকেই জগন্নাথ-ভজনার উৎপত্তি। বিস্তর চেঁচামেচি হয়েছিল তা নিয়ে। একই কথা তার আগে ও বলেছিলেন রাজেন্দ্রলাল মিত্র, এবং হান্টার, কানিংহ্যাম বা মনিয়ের-উইলিয়ামস-এর মতো ব্রিটিশ পণ্ডিতরাও। কিন্তু বিপরীত মতের ইতিহাসবিদরা সমান জোরের সঙ্গে বলেছেন, ‘বৌদ্ধধর্ম থেকে এই ধারাটির জন্ম হতে পারে না, পরবর্তী কালে এর উপর বৌদ্ধধর্মের প্রবল প্রভাব পড়েছে।’ ইতিহাসবিদ কেদারনাথ মহাপাত্রের মতে, পুরীর তিন দেবতার উৎস আসলে জৈন ত্রি-রত্ন। আবার গীতার ত্রিগুণা অধ্যায় থেকেও এসেছে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার কল্পনা।
সাবধানে গাড়ি চালান, মনে রাখবেন রাস্তায় কুকুর-বিড়াল মরলে আপনাকেই খেতে হবে।— এ রকম নানান রসিকতা গত কিছু দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের হাতে হাতে ঘুরছে। বিপাকে পড়লে বাঙালির বুদ্ধি খোলে, রসের বান ডাকে। বিপাক বইকী— মাংস খাওয়া বাঙালির এমনই অভ্যেস যে ভাগাড় থেকে হরেক রকমের মাংস সরবরাহ হয়ে আসছে জেনে অনেকেরই অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসার জোগাড়! ঘড়া ঘড়া গঙ্গাজলেও এই পাপের ক্ষালন হওয়ার নয়। তা ছাড়া গঙ্গাজলে তো কলুষ আরও বাড়বে, কারণ সেই যে মোদীজি এবং উমা ভারতী গঙ্গাকে স্বচ্ছ করবেন বললেন, তার পর থেকে পতিতোদ্ধারিণী আরও দূষিত হয়েছে।
২০১১ সালে যখন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন্টর গ্রুপ তৈরি করা হল, সবার মনেই আশা জেগেছিল। প্রেসিডেন্সি নিয়ে অনেক হচ্ছে, নামজাদা অধ্যাপকরা প্রেসিডেন্সিতে আসছেন— সংবাদমাধ্যম এবং জনসাধারণ খুব আগ্রহ নিয়ে এ বিষয়ে খবর রাখতেন। এই গ্রুপটি থেকে কালক্রমে কেউ কেউ বেরিয়ে গিয়েছেন, কেউ কেউ যোগও দিয়েছেন। গ্রুপটি ছ’মাস অন্তর রিপোর্ট দাখিল করত। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির পক্ষে সাড়ে ছ’বছর একটু বেশিই সময়— কোনও প্রতিষ্ঠানের পক্ষেই এত দিন তাগিদটা ধরে রাখা কঠিন।
প্রেসিডেন্সি কলেজের মুশকিল হয়েছিল এই যে, দেড়শো বছরেরও বেশি আগে, বাংলার নবজাগরণের সময়েই এটি নিছক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না, হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলার বৌদ্ধিক উৎকর্ষের প্রতীক। তখন থেকেই সেই ভাবমূর্তির দায় তাকে বহন করতে হয়েছে। অর্ধ শতাব্দী আগে— আমাদের তখন ছাত্রাবস্থা— নকশাল আন্দোলন বাংলার শিক্ষাব্যবস্থাটিকে বিপর্যস্ত করার পরে কয়েক দশক ধরেই এই প্রতিষ্ঠানের মান পড়ে যাওয়া নিয়ে অনেকে যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছেন। আমাদের প্রজন্মের অনেকেই যে জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছেন, তা থেকে মনে হয় এই উদ্বেগের কিছুটা বাড়াবাড়ি ছিল।
সম্প্রতি দিল্লিতে রাজ্য বিধানসভার দু’জন সদস্য মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের উপস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নিগ্রহ করেছেন। এই ঘটনার জেরে ওই দুই বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের মুখ্য আধিকারিককে নিগ্রহ করার স্পর্ধা সত্যিই অভূতপূর্ব। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫১ নম্বর ধারা অনুযায়ী এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। কোনও সরকারি অফিসারকে হুমকি দেওয়া বা এমনকী ঠেলে দেওয়াও এই ধারায় অপরাধ।
সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা বা হিংসা বাঙালির ধাতে খুব একটা নেই। তাই তাকে তাতিয়ে তুলতে দুষ্টশক্তিদের চিরকালই বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই দেখা দরকার, হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির দেবতাদের আমদানি করে কী ভাবে চৈত্রের তপ্ত বাংলাকে আরও উত্তপ্ত করে তোলা হচ্ছে। বঙ্গভূমিতে এই মাসটা শিবের গাজনের মাস। এমন শিব তো ভূভারতে আর কোথাও নেই! কৈলাসের অধীশ্বরকে আমরা শিবায়নের পদ্য শুনিয়ে আমাদের মধ্যে ডেকে এনেছি, তাঁকে গামছা পরিয়েছি, আমাদের শিবের পিছনে তাঁর স্ত্রী সারা দিন ঝাঁটা হাতে তাড়া করে বেড়ান।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিই সেই সময়, যখন বসন্ত ইউরোপে পাড়ি দেয়, তুষারকে গিয়ে বলে, এখন তোমার বিদায় নেওয়ার সময় হয়েছে; আর তার পরেই ফের ভারতে ফিরে আসে সসম্মানে। দু’টো উৎসবেরও মরশুম এটা, খ্রিস্টানদের ভ্যালেন্টাইন’স ডে আর হিন্দুদের শিবরাত্রি পালিত হয় এই সময়েই। উৎসব দু’টি সাধারণত সতর্ক থাকে যাতে এর সঙ্গে ওর দেখা না হয়ে যায়, কিন্তু এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি— একই দিনে দু’টি উৎসব পড়েছে। ভ্যালেন্টাইন’স ডে সকাল-বিকেল-সন্ধ্যা, আর পঞ্জিকামতে রাত্রি ১২।৪২।৩৯ মধ্যে শ্রীশ্রীশিবরাত্রিব্রত ও পূজা।
সুপ্রিম কোর্টের চার বর্ষীয়ান বিচারকের সাম্প্রতিক সাংবাদিক সম্মেলন কয়েকটা বিষয় একটু অস্বস্তিকর ভাবেই মুক্তকচ্ছ করে দিয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ের কতকগুলো সুনির্দিষ্ট অবস্থানকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে প্রশ্নের মুখে। যেমন, ২০১৬–র ৩০ নভেম্বর বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চের অন্তর্বর্তী রায়— ভারতের সমস্ত সিনেমা-হলে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আগে জাতীয় সংগীত বাজাতে হবে— বিশেষ একটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধি। মহামান্য বিচারপতি তাঁর রায়ে বলেছিলেন, ‘সব সিনেমা-হলে ছবি শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীত বাজাতে হবে।’
কলকাতা হল ভারতের প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ— ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র এই সাম্প্রতিক রিপোর্টে নিশ্চয় আমাদের গর্বের কারণ আছে। অবশ্য কোয়েম্বত্তূর হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ শহর, কিন্তু সেটাকে ‘প্রধান শহর’ বলা চলে না। যা লক্ষ করার, কলকাতায় অপরাধের হার দিল্লির আট ভাগেরও কম, যদিও রাজধানীতে অপরাধ দূর করতে অনেক বেশি টাকা আর লোকবল খরচা হচ্ছে। বেঙ্গালুরুকে খুবই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য ধরা হয়, তার তুলনায় কলকাতায় অপরাধের হার চার ভাগেরও কম, আর মুম্বইয়ের তুলনায় তো কলকাতা অনেক ভাল অবস্থানে আছেই।
হাতে ঠিক তিন দিন সময়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন হঠাৎ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নির্দেশ পাঠাল, ৩১ অক্টোবর সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মদিন পালন করতে হবে। ‘একতার জন্য দৌড়’, আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতা, নাটক, গান-বাজনা, প্রবন্ধ লেখার আয়োজন করতে হবে, টি-শার্ট বানাতে হবে, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আমন্ত্রণ জানাতে হবে। এই গোত্রের হুকুম দেওয়ার কোনও এক্তিয়ার যে তাদের নেই, সে কথা ভুলে গিয়ে কমিশন আদেশ করল, অনুষ্ঠানের ছবিসহ রিপোর্ট পাঠাতে হবে দিল্লিতে।
প্রতি বছর কলকাতা, দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো শহরের নাগরিকরা যখন লক্ষ লক্ষ মানুষকে কলা ও অন্যান্য ফল নিয়ে রাস্তা দিয়ে নদী বা সমুদ্রের দিকে যেতে দেখেন, তাঁরা নিশ্চয়ই ভাবেন, ছট পুজো ব্যাপারটা কী? দেওয়ালির ছ’দিন পরে এই উৎসব, এই জন্যেই এর নাম ছট, যা আসলে ষষ্ঠী-র একটি কথ্য রূপ। একে সূর্যষষ্ঠীও বলা হয়।
শেষ পর্যন্ত, ১৯৮২ সালে, মায়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় এবং ন্যূনতম সুযোগসুবিধা থেকে তাদের বঞ্চিত করতে থাকে। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও যখন রোহিঙ্গাদের রাখাইন থেকে উৎখাত করা যায় না, তখন শুরু হয় রাষ্ট্রের সাহায্যে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক আক্রমণ। রোহিঙ্গারা এর প্রতিবাদে তৈরি করে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি, যারা পাকিস্তান ও পশ্চিম এশিয়ার মুসলমান জঙ্গিগোষ্ঠীর সাহায্য নিয়ে প্রত্যাঘাত করে। খবর পাওয়া গিয়েছে যে, কিছু রোহিঙ্গা আইএস জঙ্গিদের মদত পাচ্ছে এবং তারা বাস্তবিকই ‘সন্ত্রাসবাদী’। কিন্তু সেটা পুরো ছবির একটা অংশমাত্র।
মায়ানমারের ঘনিয়ে ওঠা ভয়াল মেঘ ইতিমধ্যেই ছেয়ে ফেলেছে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাঞ্চলকে। এই মুহূর্তে আমরা এক অতিকায় মানবাধিকার সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। যদি অবিলম্বে এই সংকটের মোকাবিলায় শক্ত হাতে হাল না ধরা যায়, তা হলে অদূর ভবিষ্যতে তা আমাদের ওপরে এসেই আছড়ে পড়বে। মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর লাগাতার আক্রমণে সারা বিশ্ব স্তম্ভিত। এই সময় এ ব্যাপারে ভারতের একটি পরিষ্কার ও দৃঢ় অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন।